বর্ণাঢ্য আয়োজনে চট্টগ্রামে বিজয় দিবস উদযাপিত

বর্ণাঢ্য আয়োজনে চট্টগ্রামে উদযাপিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। শনিবার(১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় নগরীর এম. এ. আাজিজ স্টেডিয়ামে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কূচকাওয়াজ ও প্যারেড প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর বিভাগীয় কমিশনার পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে সাথে নিয়ে প্যারেড পরিদর্শন করেন। প্যারেড শেষে বেলুন ও শান্তির পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন।

বর্ণাঢ্য আয়োজনে চট্টগ্রামে বিজয় দিবস উদযাপিত 1

প্যারেডে আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে—১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ও ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে দেশের সর্বস্তরের মানুষের আত্মত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট এখন মহাকাশে বাংলাদেশের পতাকা বহন করছে। ঢাকায় উদ্বোধন হয়েছে মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নিজস্ব অর্থায়নে হয়েছে পদ্মা সেতু, রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ এবং পাবনায় নির্মিত হচ্ছে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

তিনি বলেন, এছাড়াও চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মীরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, কক্সবাজারের মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর ও কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্প দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার সুষম উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জনগণের সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণে ই-গভার্ন্যান্স ও সিটিজেন চার্টার, অভিযোগ প্রতিকার ব্যাবস্থা এবং তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হচ্ছে।

এ সময় জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সভাপতির বক্তৃতায় ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ২০৪১ সালে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন দেখছি তার কর্ণধার তোমরা। এর জন্য প্রয়োজন স্মার্ট জেনারেশন। সুতরাং স্মার্ট জেনারেশন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে আরো সচেতন হবে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহারে হবে মিতব্যয়ী, জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় হবে দৃঢ় প্রত্যয়ী।

তিনি বলেন, প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞান ক্লাব, রোবটিক্স, স্কাউটিং, ফটোগ্রাফি, বিতর্ক ও সংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। সকল প্রকার মাদক, সন্ত্রাস, কিশোর অপরাধ ও গুজবের বিরুদ্ধে থাকবে কঠোর মনোভাব। তোমাদের রুচিশীল ও মার্জিত আচরণেই গড়ে উঠবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা।

প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে বাংলাদেশ পুলিশ, অনসার-ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়াস সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, কারারক্ষী, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ স্কাউট, গার্লস গাইড এবং শিশু-কিশোর সংগঠনসহ কর্তৃক বর্ণাঢ্য কূচকাওয়াজ প্রদর্শন করে।

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা সংগীত পরিবেশনকালে শিল্পীদের বহনকারী সুসজ্জিত একটি গাড়ি মাঠ প্রদক্ষিণ করে। পরে উপস্থিত সকলে সমস্বরে জাতীয় স্লোগান জয় বাংলা উচ্চারণ করে।

অনুষ্ঠানে ডিসপ্লে করে চট্টগ্রাম শিশু একাডেমী, সরকারি শিশু পরিবার বালিকা রৌফাবাদ চট্টগ্রাম, নিষ্পাপ অটিজম স্কুল প্রবর্তক চট্টগ্রাম, লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাহাড়তলী সরকারি খান সাহেব প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়, খান সাহেব আব্দুল হাকিম উচ্চ বিদ্যালয়সহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।

এদিকে সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠিত হয়।

বর্ণাঢ্য আয়োজনে চট্টগ্রামে বিজয় দিবস উদযাপিত 2

এতে চট্টগ্রামের ৩৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তার মধ্যে মহানগরের ১৩৫ জন এবং চট্টগ্রাম জেলাধীন উপজেলা সমূহে মোট ২০০ জনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয় ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।