মহামায়া লেকে ক্যাম্পিং: প্রকৃতির সাথে নিরব প্রেমে মজতে পারেন আপনিও!

আকাশে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে চাঁদের আলো। সে আলোয় চকচক করছে লেকের সচ্ছ পানি। মাঝে মাঝে বাতাসের তোড়ে মৃদূ ঢেউ এসে লাগছে কিনারায়। একদল সৌন্দর্যপ্রেমী বসে আছে গোল হয়ে, কয়লার ভাপে সেদ্ধ হচ্ছে বারবিকিউর মাংস। কেউবা ব্যস্ত গিটার নিয়ে, কেউবা আবার গলা ছেড়ে গাইছে গান। আবার কেউ কেউ এককোণে দাড়িয়ে ভাব বিনিময়ে ব্যস্ত প্রকৃতির সাথে। প্রকৃতিতে যখন শীতের বাতাস বইতে শুরু করেছে ঠিক তখনি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মহামায়া লেকে প্রতিনিয়ত দেখা মিলছে এমন দৃশ্য। লেকের পাড়ে ক্যাম্পিং করতে প্রতিনিয়ত ছুটে আসছেন অসংখ্য পর্যটক।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত মহামায়া লেক বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হৃদ। এর আয়তন প্রায় ১১ বর্গ কিলোমিটার। মহামায়া কৃত্রিম লেক ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের রূপে ও মাধুর্যে মুগ্ধ করেছে। উপজেলার ৮ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘী বাজার থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে পাহাড়ের পাদদেশে মহামায়া লেক অবস্থিত। পাহাড়ের কোলঘেঁষে আঁকাবাঁকা লেকটি অপরূপ সুন্দর। এখানে যেমন পাওয়া যায় রাশি রাশি সবুজের সমারোহ তেমনি মনোমুগ্ধকর পাহাড়ি পরিবেশ। সেই সাথে লেকের দৃশ্য বেশ চমৎকার।

প্রায় ৮ বছর আগে থেকে এখানে ক্যাম্পিং শুরু হলেও সম্প্রতি বেড়েছে সুযোগ সুবিধা। আর পর্যটকরা এখন চাইলেই সহজে অবলোকন করতে পারেন অমেয় সেই প্রকৃতির সুধা। সেই সাথে ব্যস্ততম জীবন থেকে কিছুটা সময় প্রকিৃতির সাথে কাটানোর সুযোগও হয়েছে এই ক্যাম্পিং এর মাধ্যমে।

মহামায়া লেকে ক্যাম্পিং: প্রকৃতির সাথে নিরব প্রেমে মজতে পারেন আপনিও! 1

গত ১ নভেম্বর ঢাকা থেকে ৫ বন্ধু এসেছিলেন মহামায়া লেকে। তারা এখনও করছেন পড়াশোনা। সেমিস্টার ফাইনাল দিয়ে কিছুটা রিফ্রেশমেন্টের জন্য তারা বেচে নেন মহামায়া লেকে ক্যাম্পিং। তাদের মধ্যে সাফায়েত কবির নামে একজন জানিয়েছেন মহামায়া লেকে ক্যাম্পিং এর অভিজ্ঞতার কথা।

তিনি বলেন, আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পেইজের মাধ্যমে যোগাযোগ করে মহামায়া লেকে ক্যাম্পিং করতে আসি। এখানে এসে যে পরিমাণ মজা পেয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা। বিকেল হলে যখন সূর্যের তাপ কমে যায় তখন পরিবেশ একদম শান্ত হয়ে যায় । সন্ধ্যার আগে আগে শুরু হয় পাখির কলকাকলি । তার পর রাতের আঁধার চেয়ে গেলে কিছুটা শীত শীত অনুভব হয়। এখন শীতকাল না হওয়ায় কুয়াশা কিছুটা কম। তবুও অনেক সুন্দর লেগেছে। সেইসাথে কর্তৃপক্ষের খাবার দাওয়ার এবং আতিথেয়তাও ছিলো প্রসংশনীয়। প্রকৃতির সাথে গান-গল্পে-আড্ডায় কেটেছে পুরো রাত। এমন স্মৃতি মনে রাখার মতো।

মহামায়া কায়াকিং এন্ড ক্যাম্পিং পয়েন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী মো. সেলিম বলেন,আমরা ক্যাম্পিং এ হ্যামোক, তাবু,রাতের খাবার, ক্যাম্প ফায়ারিং, বারবিকিউ, সকালের খাবারের সুবিধা দিয়ে থাকি। এখানে প্রতিনিয়ত অসংখ্য পর্যটক আসছেন। তবে আশা করছি শীত এলে পর্যটক আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, আমরা সব সময় চাই স্বল্প খরচে সেবা দিতে। এখনও পর্যন্ত যত পর্যটক এসেছেন তাদের আমরা হাসিমুখে বিদায় দিয়েছি। মহামায়ার লেকের পাড়ে বসে যেমন প্রকৃতি দেখা যাবে তেমনি এখানকার নিরব পরিবেশ মনের শান্তি জোগাবে। তাই আপনারা যারা কায়াকিং এর চিন্তা করছেন তারা পছন্দ তালিকার শীর্ষে রাখতে পারেন মহামায়া লেক।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।