মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়তে সবাইকে কাজ করতে হবে— ভূমিমন্ত্রী

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা জননেত্রী শেখ হাসিনা তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। গত ১৩ বছর এদেশ এগিয়ে গেছে। আগামী প্রজন্মকে দক্ষ জনগোষ্ঠী হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে। তাদের যদি আমরা গড়তে না পারি এই দেশ সোমালিয়া হয়ে যাবে। আমাদের আগামী প্রজন্মকে মাদকমুক্ত গড়ার জন্য প্রত্যেকের অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর স্টেশন রোডে মোটেল সৈকতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের আয়োজন মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধ কল্পে সমাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।

মাদক বড় ধরনের সমস্যা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কিছু মাদক চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বড় লোকের ছেলেদের কীসের টেনশন? তারা সকালে উঠে বাবার হোটেল খাচ্ছে। তারা ফ্যাশনের জন্য মাদকসেবন করেন। আনোয়ারা-বাঁশখালী রোড ব্যবহার করে একসময় মাদক পাচার হতো। এখনো বিভিন্ন রোড ব্যবহার করছে। প্রতিটি মহল্লায় মহল্লায় এ ধরনের কর্মশালা করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমি নিজে ফেসবুক ব্যবহার না করলেও এখন সামাজিক যোগাযোগ বেশ প্রভাবশালী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোরালো ভাবে মাদকের ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ২০৪১ সালে দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ার জন্য নতুন প্রজন্মকে অবশ্যই মাদক থেকে দূরে রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে যেমন বলেছিলেন ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে ঠিক তেমনই মাদকের বিরুদ্ধেও ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে।

আনোয়ারা-কর্নফুলী আসনের এই সাংসদ আরও বলেন, টিসিবির গাড়ির দিকে মানুষ যাচ্ছে আমরা দেখতেছি। সরকার বসে নেই, এটা নিয়ে কাজ করছে। কীভাবে সরবরাহ বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে কাজ করছি। বাস্তবতাও মানতে হবে। রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব তেলের বাজারে পড়েছে। যুদ্ধের প্রভাব আগামী তিন মাস পরে পড়বে। করোনার সঙ্গে দুই বছর যুদ্ধ করেছে পৃথিবী। আমরাও যুদ্ধ করেছি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ নয়, প্রতিবেশী দেশে মাদক উৎপাদন হয়। মাদকের অপব্যবহারে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী কমে যাবে। যে জ্যামিতিক হারে তা চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা বন্ধ করার বিকল্প নেই।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, যদি মাদকের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে না পারি তাহলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৩০ ও ২০৪১ এর উন্নত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না। মাদকাসক্ত রোগীদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে হবে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার করতে হবে।

কর্মশালায় ডিআইজি (চট্টগ্রাম রেঞ্জ) মো. আনোয়ার হোসেন, সিএমপির কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, র‍্যাব ও কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালকবৃন্দ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগ ও প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ ১৮০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।