বান্দরবানে ৩৫০ কোটি টাকার সুপেয় পানি প্রকল্পের কাজ শুরু

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে দীর্ঘদিনের সুপেয় পানির সংকট নিরসনে শুরু হয়েছে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার বিশাল প্রকল্পের কাজ। পাহাড়ি ভৌগোলিক গঠন, ভূগর্ভস্থ পানির অভাব ও যোগাযোগের দুর্বলতার কারণে এ জেলার বহু মানুষ বছরের পর বছর বিশুদ্ধ পানির কষ্টে ভুগছেন।

এই সংকট মোকাবিলায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে সমন্বিত ও টেকসই পৌর পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প’-এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে বান্দরবান ও লামা পৌর এলাকার ১৮টি ওয়ার্ডে সুপেয় পানির পাশাপাশি আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে জানান, বান্দরবানের একমাত্র পানির উৎস সাংগু নদী। ওই নদীর পানি পরিশোধন করে টেকসই পাইপলাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হবে। এজন্য চাইঙ্গার দানেশপাড়ায় প্রায় ৪ একর জমিতে একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে।

তিনি আরও জানান, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত। এ সময়ের মধ্যে পুরো পৌর এলাকাজুড়ে নতুন এইচডিপিই পাইপ বসানো এবং সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা হবে।

পৌরসভার বাসিন্দারা বলছেন, বহু বছর পর এমন প্রকল্প শুরু হওয়ায় তারা আশাবাদী। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সবুজ দত্ত বাচ্চু বলেন, বান্দরবানে পানির কষ্ট অসহনীয়। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে আমরা উপকৃত হবো।

৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মেনু মার্মা বলেন, আমাদের এলাকায় পৌরসভার লাইন নেই। এবার যদি লাইন পাই, তাহলে অনেক সুবিধা হবে।

বনরুপা পাড়ার বাসিন্দা সুজন দেবনাথ বলেন, নতুন প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান হচ্ছে দেখে ভালো লাগছে। তবে কাজের গুণগত মান বজায় রাখা সবচেয়ে জরুরি।

প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল হাসান জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বান্দরবানে পানির সংকট দূর হবে এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা আগের তুলনায় অনেক উন্নত হবে। বর্তমানে এক-দু’দিন পরপর পানি সরবরাহ করা হয়, কিন্তু প্রকল্প শেষ হলে সার্বক্ষণিক পানি পাওয়া যাবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।