কেএনএফ’র চুক্তি ভঙ্গ—স্থগিত শান্তি আলোচনা

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে শান্তি কমিটির শান্তি আলোচনা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শান্তি কমিটির আহ্বায়ক ক্য শৈ হ্লা।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সভা কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ক্য শৈ হ্লা বলেন, সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে গত ২৯ মে জেলার অরুণ সারকী টাউন হলে মতবিনিময় সভা করা হয়। সেখানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি ছিলেন।
তারই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৯ জুন স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠিত হয়েছিল। পরে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে কয়েক দফা ভার্চ্যুয়াল সভার পর উভয়পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সরাসরি সংলাপে বসার সুযোগ সৃষ্টি হওয়াতে গত ৫ নভেম্বর এবং পরে চলতি মাসের ৫ তারিখ দুই দফা সরাসরি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

ধারাবাহিক বৈঠক ও সংলাপের ফলাফল সম্পর্কে তিনি বলেন—‘উভয় সংলাপে কেএনএফের সশস্ত্র কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা ও অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত দুটি সমঝোতা স্মারক সম্পাদন হয়। কিন্তু তারা সম্পূর্ণভাবে চুক্তি ভঙ্গ করে বিভিন্ন সময় সশস্ত্র কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কমিটির তরফ থেকে এ বিষয়টির ব্যাপারে বারবার জানানো হলেও তারা কর্ণপাত করেনি। বরং বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন সময় স্থানীয়দের ওপর হামলা, চাঁদাবাজি, অপরহণসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।’

এসব কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ২ এপ্রিল রুমায় তারাবির নামাজিদের ওপর বর্বরোচিত হামলা, সরকারি কর্মকর্তা ও পথচারীদের জিম্মি করে হামলা, অর্থ লুটের উদ্দেশে সোনালী ব্যাংকে হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া এবং ৩ এপ্রিল থানচি উপজেলায় স্থানীয়দের জিম্মি করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ ও দুটি ব্যাংক লুট করে কেএনএফ সদস্যরা। কয়েক দফায় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করায় কুকি-চিনের সঙ্গে শান্তি কমিটির সব শান্তি আলোচনা স্থগিত করা হলো।’

প্রসঙ্গত, ২ রাতে রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ২০টি অস্ত্র ও নগদ টাকা পয়সা লুট করে কেএনএফ। একই সঙ্গে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দীন রাসেলকে অপহরণ করে।
এরপরদিন দিনে দুপুরে গুলি করতে করতে থানচি বাজারে প্রবেশ করে এবং দুটি ব্যাংক লুট করে কেএনএফ সদস্যরা। ৪ এপ্রিল দুপুর ২টা পর্যন্ত অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।