চবিতে ৮টি আন্তর্জাতিক মানের জিনোম গবেষণাগারের যাত্রা শুরু

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) যৌথভাবে মোট আটটি আন্তর্জাতিক জিনোম গবেষণাগার স্থাপিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৭টি বায়োটেকনোলজি রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন সেন্টারের আওতায় জীববিজ্ঞান গবেষণাগার ও অপর একটি হলো ঢাকার চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও সুইজারল্যান্ডের ফাইন্ড ডায়াগনস্টিকের সহায়তায় নেক্সট জেনারেশন সিকুয়েন্সিং রিসার্চ এন্ড ইনভেশন ল্যাব চিটাগাং।

সোমবার (২৩ মে) দুপুরে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগে এসব গবেষণার উদ্বোধন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দেশে প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক জিনোম গবেষণাগার যাত্রা করল।

বায়োটেকনোলজি রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন সেন্টারের আওতায় স্থাপিত গবেষণাগারগুলো হলো, জিন ও প্রোটিন গবেষণা ল্যাব, অণুজীব গবেষণা ল্যাব, রোগতত্ত্ব গবেষণা ল্যাব, ফার্মাসিউটিকাল গবেষণা ল্যাব, ক্যান্সার গবেষণা ল্যাব, পরিবেশ ও দৈহিক বৃদ্ধি গবেষণা ল্যাব এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল বায়োটেকনোলজি গবেষনাগার।

অপরদিকে ঢাকার চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও সুইজারল্যান্ডের ফাইন্ড ডায়াগনস্টিকের সহায়তায় স্থাপিত নেক্সট জেনারেশন সিকুয়েন্সিং রিসার্চ এন্ড ইনভেশন ল্যাব চিটাগাং মূলত চট্টগ্রামের সকল প্রকারের অণুজীব, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের জিনোম বিন্যাস উন্মোচনের কাজ করবে। এই গবেষণাগারের ফলে চট্টগ্রামের ভবিষ্যৎ যে কোন মহামারীতে বাইরের সাহায্য ছাড়াই জিনোম গবেষণা সম্ভব হবে এবং বিভিন্ন রকম অণুজীবের সংক্রমণ, পরিবর্তন ও রুপ প্রকৃতির কারণ নিয়ে গবেষণা সহজতর হবে।

চবিতে ৮টি আন্তর্জাতিক মানের জিনোম গবেষণাগারের যাত্রা শুরু 1

এসব গবেষণাগারের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে ছিলেন অণুজীববিজ্ঞানী ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পোলিও বিষয়ক উপদেষ্টা ড. সেঁজুতি সাহা।

এসময় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগের সভাপতি ড. নাজনীন নাহার ইসলামের সভাপতিত্বে বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আদনান মান্নানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, জ্ঞান-গবেষণার অন্যতম চারনভূমি হল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীন ও নবীন গবেষকরা তাদের গবেষণা কর্মের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে স্বনামধন্য হয়েছেন। পাশাপাশি তাদের গবেষণার মাধ্যমে দেশ-জাতি তথা সারা বিশ্ব উপকৃত হয়েছে।

অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার অণুজীববিজ্ঞানী ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টা ড. সেঁজুতি সাহা বলেন, আমরা সবাই জানি সংক্রামক রোগের জন্য জিনোম সিকুয়েন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকোন সংক্রামক ব্যাকটেরিয়ার জন্য আমাদের বুঝতে হবে। কি জীবাণু দিয়ে রোগগুলো হচ্ছে জীবাণুগুলোকে বুঝতে হবে। আমরা যদি জীবাণুগুলো বুঝি তাহলে রোগীদের সঠিক চিকিৎসা দিতে পারব।পরবর্তীতে সঠিক ভ্যাকসিন আনতে পারব। যদি পুরো দেশে জিনোম সিকুয়েন্স করতে হয় তাহলে খুবই জরুরি আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের ট্রেনিং দিয়ে বের করা।

চবিতে ৮টি আন্তর্জাতিক মানের জিনোম গবেষণাগারের যাত্রা শুরু 2

তিনি বলেন, এজন্যই চবি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সঙ্গে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন কলাবরেট করছে। সুইজারল্যান্ডের ফাইন্ড ডায়াগনস্টিক এর সহায়তায় জিনোম গবেষণা কেন্দ্র করছি। এখানে জিনোম সিকুয়েন্স করার মেশিন আছে। এছাড়াও যা যা প্রয়োজন আমরা করছি। এই জিনোম সিকুয়েন্স ব্যবহার করে দেশের স্বার্থে, দেশের জন্য গবেষণা করা যাবে।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে, জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. তৌহিদ হোসেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. এম.এ. সাত্তার, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণাগারের (বিসিএসআইআর) পরিচালক ড. গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন (বিআইটিআইডি) এর পরিচালক ড. নাসির উদ্দিন, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রথম বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-ফোরকান, প্রফেসর ড. লুলু ওয়াল মারজান, প্রফেসর ড. এস এম রফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ড. এ এম আবু আহমেদ ও সহযোগী অধ্যাপক এ এম মাসুদুল আজাদ চৌধুরী।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।