দুই দশকে গ্রাহকের আস্থায় ওয়েল ফুড, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও

ওয়েল ফুড—খাবারের জগতে এ যেন এক বিস্ময়ের নাম। মেইড ফ্রেশ এভরিডে—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০০৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নগরীর জিইসির মোড়ে মাত্র একটি আউটলেট নিয়ে যাত্রা শুরু করে ওয়েল গ্রুপের এই প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশকে এসে গ্রাহকের আস্থায় অনবধ্য নাম ওয়েল ফুড। নিত্য নতুন খাবার তৈরি ও খাবারের গুনগত মান ধরে রাখতে গ্রাহকের কাছে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগ্রুপ ওয়েল গ্রুপের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হলো ওয়েল ফুড। প্রতিষ্ঠানটির মোট টার্নওভারের মাত্র ১০ শতাংশ ওয়েল ফুডের ব্যবসা। টেক্সটাইল শিল্প নিয়ে ওয়েল গ্রুপ যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ওয়েল ফুডের কারণে এই প্রতিষ্ঠান দেশব্যাপী সমাদৃত ও সর্বজন পরিচিত।

টেক্সটাইল শিল্পে নিজেদের অবস্থান তারা পাকা-পোক্ত করেছে অনেক আগেই। এই শিল্প সম্পৃক্তের বাইরের মানুষ তাদের ওয়েল ফুডের ব্যবসায়ী হিসেবে বেশি চেনে। গ্রাহকের আস্থায় ওয়েল ফুড কর্তৃপক্ষ মনে করেন এই ফুড ব্যবসা অনেক দূর যাবে।

মালিকপক্ষ বর্তমানে ব্র্যান্ড ও মান বৃদ্ধিতে কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠানটির স্বপ্ন পরর্বতী প্রজন্মের জন্য হাজার কোটি টাকা রেখে যেতে না পারলেও তারা হাজার কোটি টাকা দামের একটি ব্র্যান্ড রেখে যাবেন। ওয়েল ফুড বাংলাদেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড হবে। শুধু তাই নয় আন্তর্জাতিক মানের ব্র্যান্ড হিসাবে দেখতে চায় ওয়েল ফুড।

দুই দশকে গ্রাহকের আস্থায় ওয়েল ফুড, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও 1

বর্তমানে, খাবারের বিশ্বস্ত এই ব্র্যান্ডটি গ্রাহকের আস্থা ধরে রাখায় এর শেকড় ছড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। রাজধানী ঢাকা থেকে সিলেট। দেশের বৃহৎ এই তিনটি জেলা শহর মিলিয়ে ওয়েল ফুডের বর্তমান আউটলেট সংখ্যা প্রায় ৭০ এর কাছাকাছি।

শুধু তাই নয় দেশের গন্ডি পেরিয়ে ওয়েল ফুড বিদেশের মাটিতে তৈরি করে নিয়েছে বিশেষ আস্থা। নিয়মিতভাবে এই ব্র্যান্ডের পন্য এখন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, দুবাইতে যাচ্ছে।

শুরুটা ব্রেড-কেক-বিস্কিট দিয়ে হলেও বর্তমানে এই কোম্পানির তালিকায় রয়েছে ৫৪০ টিরও বেশি আইটেমের পন্য।
মিষ্টির মধ্যে রয়েছে- ইরানীভোগ, কাঁচা গোল্লা, বাকলাভা, লাল মোহন, রসগোল্লা, কালো জাম, মাহিদানা লাড্ডু, মাওয়া লাড্ডু, মতিচুর লাড্ডুসহ নানা প্রকার মিষ্টি।

দুই দশকে গ্রাহকের আস্থায় ওয়েল ফুড, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও 2

জন্মদিনসহ ঘরোয়া নানান আয়োজন, পার্টিতে কেক মানে তো ওয়েল ফুডের কেক। ওয়েল ফুডের কেকের মধ্যে রয়েছে প্রিমিয়াম ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক, ভ্যানিলা ফ্রেশ ফ্রুটস কেক, ভ্যানিলা এনিভার্সারি কেক, রেড ভেলভেটে চীজ কেক, ফেরীরো রচার চকলেট কেক, মিরর চকলেট কেক, ক্যারামেল মসি কেক, ভ্যানিলা লেমন কেক গ্রাহকের শীর্ষ পছন্দ।

ওয়েল ফুডের ব্রাউন ব্রেড, মিল্ক ব্রেড, স্যান্ডুইচ ব্রেড, হানি ব্রেড, বাটার ব্রেড, বার্গার বান, ক্রীম বানতো গ্রাহকের কাছে সেই শুরু থেকেই সমাদ্রিত। এছাড়া বাটার কুকিজ, চকলেট চিপনস কুকিজ, মিল্ক সল্ট কুকিজ, সুগার ফ্রি কুকিজ, বাটার সল্ট কুকিজ, পিস্টাচিও কুকিজ, আলমন্ড চকো ফিল কুকিজ, চকো চিজ বাইটসতো আছেই।

সাথে আছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বেলা বিস্কুট, চকলেট ড্রাই কেক, ড্রাই কেক প্রিমিয়াম, সুগার ফ্রি বিস্কুট, ক্রীসপি বাটার বিস্কুট, হরি প্লাস, হরি প্লাস, ওভাল প্লাস, চকো বাইট প্রিমিয়াম, চকো নিমকিসহ হরেক পদের বিস্কুট।

দুই দশকে গ্রাহকের আস্থায় ওয়েল ফুড, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও 3

স্ন্যাকস আইটেমের মধ্যে রয়েছে- চিকেন শর্মা, চিকেন কাটলেট স্যান্ডউইচ, চিকেন বার্গার, চিকেন কিমা পরোটা, চিকেন ব্রেড রোলসহ নানান আইটেম।

এই প্রতিষ্ঠানের রয়েছে ব্রাজিলের বিখ্যাত কফি। যার নামকরণ করা করা হয়েছে ‘রিও ক্যাফে’। প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে ভিন্ন স্বাদের কফিতে জমে যায় আড্ডা। কফির আড্ডায় আটকে যেতে পেরে ঘড়ি ধরা সময়। তুষ্টি মেলে রিওর কফিতে চুমুক দিয়ে।

ওয়েল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম কমু চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, ফুড ব্যবসায় মান ধরে রাখা চ্যালেঞ্জিং। একজন ক্রেতা যখন একটি পন্য কিনেন তখন তিনি শুধুমাত্র ওই পন্যটি কিনেন না। এর সাথে সম্মান, সার্ভিস, কোয়ালিটিও কিনেন। সে জায়গাটি আমরা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। আমাদের প্রোডাক্ট মানসম্মত প্রোডাক্ট। এটা আমাদের মূল চালিকা শক্তি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পন্য বর্তমানে দেশের বাইরে যাচ্ছে। বিদেশে বসবাসরত বাঙালিদের টার্গেট করেই আমাদের পন্য বিদেশে রপ্তানি করা। তারা বাংলাদেশী পন্য দেখলেই কিনতে চায়। এটি ভিন্ন রকমের একটি আত্মতুষ্টি আমাদের। কাঁচামালসহ আনুষাঙ্গিক সংকট কাটিয়ে যেতে পারলে ওয়েল ফুড আগামীতেও সগৌরবে তার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।