নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৪৯ সালের এদিনে পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে আটক ছিলেন। তাঁকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয়ভাবে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ করা হলেও পরবর্তী সময়ে অসামপ্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম ‘আওয়ামী লীগ’ করা হয়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। আর ‘পূর্ব পাকিস্তান’ শব্দ দুইটি বাদ পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে।

বাংলাদেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে প্রবাসী সরকারের সব কাগজপত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নাম ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৭০ সাল থেকে এ দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। পরবর্তী সময়ে দেশের অন্যতম প্রাচীন এ সংগঠনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়।

দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। প্রিন্ট মিডিয়া বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। ইলেক্ট্রনিয়া মিডিয়াগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে।

’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ’৬৪-এর দাঙ্গার পর সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি প্রতিষ্ঠা, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৪ বছরের আপোষহীন সংগ্রাম-লড়াই এবং ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা হলেও দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩ জুন দলটি ক্ষমতায় ফিরে আসে। ২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আর এক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় আওয়ামী লীগ। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুযারি এবং ২০১৮-এর ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করছে এ দলটি। চট্টগ্রামেও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

নগর আওয়ামী লীগ : ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্টেশন রোডস্থ পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে বিকাল ৩টায় বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ : উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা দোস্ত বিল্ডিং দলীয় কার্যালয়ে বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া রয়েছে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ : আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা আজ বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।