পূজামণ্ডপ ঘিরে থাকবে সিসি ক্যামেরার নজরদারি, সংরক্ষণ হবে ফুটেজ

দুর্গাপূজায় সিএমপির ৩২ নির্দেশনা

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে পূজামণ্ডপের আশপাশের এলাকা থাকবে সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে। সেইসাথে কঠোর হস্তে সংরক্ষণ করা হবে সিসি ফুটেজ। এছাড়া নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যৎ সংযোগ নিশ্চিতে জেনারেটর ও যান্ত্রিক ত্রুটি নিরুপনে নিয়োজিত থাকবেন ইলেক্ট্রিশিয়ান।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় এসব বিষয়সহ দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা জনিত ৩২ নির্দেশনা তুলে ধরেন। এর আগে পুলিশ লাইন্সের মাল্টিপারপাস শেডে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দায়িত্বশীল সরকারি অন্যান্য সংস্থার অংশগ্রহণে আইন-শৃংখলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্তে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নির্দেশনার মধ্যে আছে— প্রতিমা তৈরির সময় নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা; পূজামণ্ডপের প্রবেশমুখে পুরুষ ও নারীর জন্য পৃথকভাবে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা; হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও থার্মাল স্ক্যানার রাখতে হবে; পূজামণ্ডপে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ;মন্ডপের চারদিকে বা ওপরের অংশ উন্মুক্ত রাখতে হবে।

নির্দেশনার আরও আছে, মণ্ডপের ভেতর একসঙ্গে ২০ জনের অধিক লোক অবস্থান করতে পারবে না; জরুরি সেবার ফোন ও মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ ; পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের জরুরি সেবার নম্বরগুলো দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করে রাখতে হবে।

নিরাপদ স্থানে পূজামন্ডপ স্থাপনের ওপর জোর দিয়ে সিএমপি নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, মণ্ডপসমূহে অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে সিএমপির নির্দেশনায়। পূজামন্ডপ কোনো ধরনের থিম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা ডিজে পার্টির আয়োজন করা যাবে না। আজান ও নামাজের সময় সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখতে হবে।

সিএমপি নির্দেশনা দিয়ে বলছে, অজ্ঞানপার্টি ও মলমপার্টি থেকে সতর্ক থাকতে হবে। অপরিচিত ব্যক্তির দেওয়া কিছু খাওয়া বা পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া যত্রতত্র গাড়ি রাখা যাবে না। নারীদের যৌন হয়রানি বা ইভটিজিং এর বিরুদ্ধেও প্রতিরোধে মণ্ডপ কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং পুলিশকে তাৎক্ষণিক জানাতে হবে। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও বাহিরের পথ রাখতে হবে। পূজামণ্ডপের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে সার্বক্ষণিক নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন এবং স্বেচ্ছাসেবকদের চেনার সুবিধার্থে নির্দিষ্ট পোশাকের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবকদের নামের তালিকা থানার ওসির কাছে জমা দিতে হবে।

সিএমপি জানিয়েছে, যেকোনো ঘটনার সংবাদ দ্রুততার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিতে হবে। মাদক গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পূজামণ্ডপের আশপাশে মেলা বা জুয়ার আসর বসানো যাবে না। আতশবাজি-পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকতে হবে। ফেসবুকে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অথবা লোকমুখে যেকোনো ধরনের গুজব বা অনাকাক্ষিত বিষয়ে নিকটস্থ থানায় অবহিত করতে হবে। সেইসাথে আগামী ৫ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করার নির্দেশনাও দেয়া হয়।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন— চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ মাসুদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিনসহ পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, দুর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও সরকারি অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।