প্রতিদিন ১৪০ টন প্লাস্টিক বর্জ্যে ডুবছে চট্টগ্রাম মহানগর

চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতিদিন ৮৭ লাখ মানুষ ৩০০ টন বর্জ্য সৃষ্টি করে। যার মধ্যে ২৪৯ টন প্লাস্টিক বর্জ্য। এর ৫৬ শতাংশ (১৪০টন) রিসাইক্লিংয়ের জন্য সংগ্রহ না করায় নগরীর খাল নালা ও পরিবেশের সাথে মিশে পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। এই প্লাস্টিক পলিথিনের কারণে বাড়ছে জলাবন্ধতা। পানি দূষণ, দূর্গন্ধযুক্ত আবহাওয়া, রাস্তার পাশের ময়লা আবর্জনা মানুষের স্বাস্থ্যগত সমস্যার একটি বড় কারণ। এছাড়া প্লাস্টিক পলিথিন নদী ও সাগরে মিশে ধ্বংস হচ্ছে মাছ। এই পলিথিন প্লাস্টিক বৃহৎ জলজ প্রাণী তিমিরও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সোলতান আহমদ হলে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ও বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম আয়োজিত গবেষণা প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, যত্রতত্র প্লাস্টিক ছুড়ে ফেলা, পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকা, প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের অভাব, প্লাস্টিক পুড়ানো, প্লাস্টিক দূষণের কারণ সম্পর্কে অজ্ঞতা, অপচনশীলতা ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্লাস্টিক বর্জ্যে দূষণ দিন দিন বাড়ছে।

প্রতিদিন ১৪০ টন প্লাস্টিক বর্জ্যে ডুবছে চট্টগ্রাম মহানগর 1

প্লাস্টিক দূষণের কারণে খাবার, পানি পান, নিশ্বাসের সাথে মাইক্রোপ্লাস্টিক আমাদের দেহে প্রবেশ করছে — এমনন বিষয় তুলে ধরে অরও বলা হয়, প্লাস্টিক পলিথিনের সাথে থাকা ক্যামিক্যাল এডিটিবস মানুষের শরীরে ঢুকে ক্যান্সার, বন্ধ্যাত্ব এবং অটিজমের মতো রোগ সৃষ্টি করছে। প্লাস্টিক পলিথিন বর্জ্য পরিবেশ এসে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া (প্যাথোজেন) এর মতো অনুজীবকে আকর্ষণ করে যা পরবর্তীতে প্যাথেজেন ধারণকারী মাইক্রোপ্লাস্টিককনা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
গবেষণা প্রবন্ধে আরো জানানো হয়, ৩০ শতাংশ মানুষ প্লাস্টিক পলিথিনের পুর্নব্যবহার করে, ৪৬ শতাংশ মানুষ কখনও প্লাস্টিকের পুর্নব্যবহার করে না, ১১ শতাংশ মানুষ কখনো কখনো পুর্নব্যবহার করে।

গবেষণায় বলা হয়, সড়ক কার্পেটিংয়ে বিটুমিনের সাথে ৫-১০ শতাংশ প্লাস্টিক পলিথিন মেশানোর ফলে পরিবেশ দূষণ কমবে, প্রতি কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিংয়ে ২ লাখ ৭৫হাজার টাকা সাশ্রয় হবে সেই সাথে তৈরি সড়ক দ্বিগুণ স্থায়ী হবে।

পরিবেশকর্মী দিলরুবা খানমের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সভাপতি ও চুয়েট ভিসি (প্রাক্তন) প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়েট ছাত্র প্রকৌশলী পিয়াল বড়ুয়া ও প্রকৌশলী আল আমিন প্রফেসর ড. স্বপন কুমার পালিতের তত্ত্বাবধানে গত এক বছর ধরে নগরীর বাকলিয়া চান্দগাঁও মুরাদপুর, চকবাজার, খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ, সিইপিজেডসহ ১৫ ওয়ার্ডে গত এক বছর ধরে এই গবেষণা কাজ পরিচালনা করেন। গবেষণায় সার্বিক সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।