প্রধানমন্ত্রীর ১০ উদ্যোগ বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে—প্রধান তথ্য অফিসার

প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর দশ বিশেষ উদ্যোগ এসডিজির সাথে সম্পর্কিত বলে শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে এই দশ উদ্যোগ জনগণের জীবন-মানে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। পাশাপাশি মহামারিসহ বিশ্ব বিপর্যয়ের সময়ও বাংলাদেশ দশ উদ্যোগের সুফলের কারনে স্বমহিমায় নিজের স্বাতন্ত্র অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।”

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পিআইডির চট্টগ্রামের সম্মেলন কক্ষে তথ্য অধিদফতর (পিআইডি) ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দশ বিশেষ উদ্যোগ ব্রান্ডিং’ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মত বিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

পিআইডি চট্টগ্রামের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পিআইডি ঢাকার সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. আব্দুল জলিল, সিনিয়র তথ্য অফিসার খালেদা বেগম। এতে দশ উদ্যোগ বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য সংবলিত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম পিআইডির উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীর।

সভায় মুক্ত আলোচনায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সিনিয়র সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ১০ উদ্যোগ বিষয়ক যেসব তথ্য উপাত্ত আজ পরিবেশন করা হলো তা দিয়ে কমপক্ষে ২০টি রির্পোট তৈরি করা যাবে। তিনি আরো বলেন, ভূয়া টিভি ও অনুমোদনহীন আইপি টিভি যেগুলো আছে সেগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা ও তারা যাতে রেজিস্ট্রেশন করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি বলেন, এসব অপসাংবাদিকতার কারনে মূলধারার সাংবাদিকগণ বিব্রত।”

প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক বলেন, “ব্রান্ডিং একটা স্মার্ট শব্দ। বাংলাদেশে উন্নয়ন সাংবাদিকতা অনেক হচ্ছে। কিন্তু সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের তথ্য নিতে বিভিন্ন দপ্তরে গেলে কর্মকর্তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় না। এবং এর ফলে উন্নয়ন সাংবাদিকতা ব্যহত হচ্ছে। এ ব্যাপারে পিআইডি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।”

দৈনিক পূর্বকোণের সাংবাদিক ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, “সাংবাদিক এবং পিআইডি একই পরিবার। আমাদের মধ্যে যোগাযোগ আরো নিবিড় করতে হবে। এর ফলে সরকারি উন্নয়ন কাজের ইতিবাচক প্রচারণা আরো জোরদার হবে।”

নিউজ২৪ এর সাংবাদিক শেখ জায়েদ বলেন, “চট্টগ্রাম পিআইডি যে তথ্যবিবরণী ও ছবি পাঠায় তা আমাদের নিউজ করার ক্ষেত্রে খুবই সাহায্য করে। সংবাদের পাশাপাশি ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ করে পাঠানো হলে সে ক্লিপ সম্প্রচার করতে আমাদের সুবিধা হয় এবং এটা কাজকে আরো ত্বরান্বিত করবে।”

“মেগা প্রকল্পের সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে ঢাকার সাংবাদিকরা অগ্রাধিকার পায় কিন্তু চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এক্ষেত্রে পিআইডির পক্ষ থেকে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করে হালনাগাদ তথ্য পরিবেশন করলে এ বিষয়ক ইতিবাচক প্রচারণা আরো জোরদার হবে” বলে দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ পত্রিকার চীফ রিপোর্টার সুভ্রজিত বড়ুয়া সভায় উল্লেখ করেন।

প্রধান তথ্য অফিসার সাংবাদিকদের এসব বক্তব্যের বিষয়ে একমত পোষণ করে বলেন, “দশ উদ্যোগের ফলে দেশের উন্নয়নের সমবন্টন নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে উন্নয়নের সুফল। দশ উদ্যোগ তৃণমূলে মানুষকে স্বাবলম্ভি করেছে। তাদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছে।”
তিনি বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনায় বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি সচল রাখার যে ক্যারিশমা প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন তা সত্যিই বিরল। আজকে বিশ্বের অনেক দেশের রিজার্ভ তলানিতে। কিন্তু আমাদের রিজার্ভ ধীরে ধীরে বাড়ছে।”

মো. শাহেনুর মিয়া বলেন, “সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের শত্রু হতে পারে না। তারা বন্ধু হয়ে রাষ্ট্রের উন্নয়নে কাজ করে। বর্তমানে সময় যত যাচ্ছে আমাদের সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে। এসব চ্যালেঞ্জের সাথে চলতে হবে। তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন বক্তব্যের জবাবে পিআইডির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সেইসাথে দেশের উন্নয়ন জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান।”

এর আগে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রীর ১০ বিশেষ উদ্যোগের সুফর তুলে ধরা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ হলো—একটি বাড়ি একটি খামার (বর্তমানে আমার বাড়ি আমার খামার), আশ্রয়ণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, বিনিয়োগ বিকাশ এবং পরিবেশ সুরক্ষা বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান ও আয় বৃদ্ধির কার্যক্রম।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পিআইডি ঢাকার উপপ্রধান তথ্য অফিসার সুমন মেহেদী, এ এইচ এম মাসুম বিল্লাহ, সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. আসাদুজ্জামান খান, এ এম ইমদাদুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসার চট্টগ্রামের পরিচালক আজিজুল হক নিউটন, পিআইডি চট্টগ্রামের উপপ্রধান তথ অফিসার কৃপাময় চাকমাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৪০ জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।