লংগদু যুবলীগের নেতৃত্বে আলোচনায় যারা

সম্মেলন ৯ ফেব্রুয়ারি

দীর্ঘদিন পর রাঙামাটির লংগদু উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। সম্মেলন ঘিরে চলছে সাজ সাজ রব। কারা আসছেন নেতৃত্বে—তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনা, হিসাব-নিকাশ। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে আসন্ন কমিটিতে শীর্ষস্থান পেতে পদপ্রত্যাশী নেতারা যে যার মতো তদবির করে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে লংগদু উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন ঘিরে উজ্জ্বীবিত হয়ে উঠেছে যুবলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে সম্মেলনে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদকে ঘিরে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। প্রায় ১ যুগ পর ৩ বছর মেয়াদি যুবলীগের এই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

কমিটিতে স্থান পেতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ৯ নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। পদপ্রত্যাশীরা সম্মেলনকে সামনে রেখে বেশি সরব হয়ে উঠেছে। তবে যুবলীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা মনে করেন সংগঠনের দুর্দিনে যারা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সংগঠনের হাল ধরে রেখেছেন, নানা ত্যাগের ভেতর জেল-জুলুম সহ্য করে সংগঠনের কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন, ক্লিন ইমেজ ধরে রেখেছেন তারাই পরীক্ষিত সৈনিক হিসেবে সংগঠনের মূল নেতৃত্বে আসুক।

এদিকে লংগদু উপজেলায় যুবলীগের সম্মেলন ঘিরে তৎপরতা বেড়েছে পদপ্রত্যাশী বর্তমান যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের। শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরা ইতোমধ্যে রাঙামাটি জেলা যুবলীগ, যুবলীগের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদের নেতাদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন। বিভিন্নভাবে তদবির-লবিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ কারণে সব মিলিয়ে লংগদুতে যুবলীগের রাজনীতিতে চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। বিভিন্ন এলাকাসহ উপজেলা জুড়ে পদ প্রত্যাশীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টারে ছেয়ে গেছে। সাধারণ নেতাকর্মীরা কিছুটা উজ্জ্বীবিত হয়েছেন। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি-সম্পাদক পদে বর্তমান উপজেলা যুবলীগের নেতারা ছাড়াও ছাত্রলীগের সাবেক কয়েক নেতা আলোচনায় রয়েছে। এবারের কমিটিতে চমক আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিতর্কিত কাউকেই পদ দেওয়া হবে না বলে কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

যুবলীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানান, বিগত দিনে যার ত্যাগ রয়েছে। বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। যারা দীর্ঘদিন থেকে ত্যাগ স্বীকার করে মুজিব আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করে এসেছেন তাদের যেন মূল্যায়ন করা হয়।

এদিকে এর মধ্যে সভাপতি পদে উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, লংগদু ইউপি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. চান মিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত ৩২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের বর্তমান কমিটির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের জুয়েল।

সাধারণ সম্পাদক পদে উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল উদ্দীন পাশা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগের সহ সম্পাদক রাকিব হাসান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবনেতা তোফায়েল আহমেদ বাবুল এবং উপজেলা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ কার্যালয় ও পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক, যুবনেতা দীপংকর দাশ গুপ্ত আলোচনায় রয়েছেন। এছাড়া আরও একাধিক নেতা আছেন যুবলীগের নেতৃত্বের দৌড়ে। তবে সভাপতি পদে মোঃ চান মিয়া ও আব্দুল কাদের জুয়েল প্রচার প্রচারনায় এগিয়ে থাকলেও মাঠে সরাগম নেই রফিকুল ইসলামের কার্যক্রম।

এ বিষয়ে লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু বলেন- “যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, ত্যাগ ও শ্রম দেখে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে এবং রাজনৈতিক দক্ষতা, সততা ও গ্রহণযোগ্যতা আছে, ভালো সংগঠক— এমন নেতৃত্বই আসবে যেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুব সমাজকে একত্রিত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত শক্ত করতে নৌকা বিজয়ের লক্ষ্যে কাজ করতে সর্বপরি সক্ষম হয়। অন্যদিকে লংগদু উপজেলা যুবলীগকে একটি মানবিক আদর্শিক যুব সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।”

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ পরিবারের বাহিরে কেউ নেতৃত্ব আসবে না। এক কথায় যুব সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য ও মেধাবীদেরই নেতৃত্বে আনা হবে। তরুণ, সাবেক ছাত্রনেতা ও অভিজ্ঞদের মিলেমিশেই যুবলীগের কমিটি গঠন করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ জানুয়ারি রাঙামাটি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। আগ্রহীদের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলা যুবলীগ কার্যালয়ের দপ্তর শাখায় জীবনবৃত্তান্ত জমা এবং ২০ জানুয়ারির মধ্যে সকল ইউনিয়নের কাউন্সিলরদের তালিকা প্রেরণ করতে বলা হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালে লংগদু উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।