সিএমপির অনন্য পরিবর্তনের কারিগরের হাতে গৌরবের পদক

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) বিদায়ী কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর এবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) অর্জন করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা সততা ও শৃঙখলামূলক আচরণের মাধ্যমে অবদান রাখায় সালেহ তানভীরসহ ২৫ পুলিশ কর্মকর্তাকে সরকার বিপিএম পদকে ভূষিত করেছে।

কোন কাজটির জন্য পদক পেয়েছেন জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি ও সেন্ট্রাল পুলিশ হসপিটালের পরিচালক সালেহ মোহাম্মদ তানভীর চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, চট্টগ্রাম নগর কমিশনারের দায়িত্বে থাকাকালে আমি শুধু পুলিশিং করেছি। এর বাইরে কিছু তো করিনি। নগরবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছি। আমার ডিপার্টমেন্ট কাজের মূল্যায়ন করেছে।

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা তুলে ধরে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর প্রতিষ্ঠা, ৮০০ সিসি ক্যামরার সমন্বয়ে আই’স অব সিএমপি গঠন, আমার গাড়ি নিরাপদ অ্যাপসের মাধ্যমে নগরীতে চালু থাকা সিএনজি চালিত অটোরিক্সার ডাটাবেইজ গঠন, কোনো রকম অর্থনৈতিক লেনদেন ছাড়াই থানার ওসি ও ফাঁড়ি আইসি পদায়ন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রেখে কোনো রকম গণ্ডগোল ছাড়াই নগরবাসীকে স্বস্তি দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে বিপিএম পদকের জন্য সালেহ মোহাম্মদ তানভীরকে বাছাই করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, সালেহ তানভীর সিএমপি কমিশনার থাকাকালে অধঃস্তন পুলিশ কর্মকর্তাগণ কোনো রকম ‘অসৎ, অনৈতিক’ চাপে থাকতেন না। বিশেষ করে থানার ওসিরা স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যার প্রভাব পড়েছে পুলিশের আচার-আচরণ, দায়িত্ববোধে। বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরের নজর কেড়েছে। এছাড়া দৃশ্যমান কিছু উদ্যোগ পুলিশের দায়িত্ব পালনকে যেমন সহজ করেছে তেমনি ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে।

সালেহ মো. তানভীর ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট সিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ২০২২ সালের ৩০ জুন তাকে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে বদলী করা হয়।

সালেহ তানভীরের হাত ধরে সিএমপি স্কুল এন্ড কলেজ উন্নত পাঠদানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য বিশেষায়িত ল্যাব প্রতিষ্ঠা, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানটি এখন চট্টগ্রাম অন্যতম স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান।

পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে দামপাড়ার বিভাগীয় পুলিশ হসপিটালেও। স্যাঁত স্যাঁতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের পরিবর্তে ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স রয়েছে বিভাগী পুলিশ হসপিটালে। সিএমপির সবস্তরের কর্মকর্তা-সদস্যদের জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সম্বলিত স্পোর্টস কমপ্লেক্স।
অত্যাধুনিক রেশন স্টোর নির্মাণের পাশাপাশি বিতরণেও এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই পুলিশ সদস্যরা রেশন উত্তোলন করতে পারেন।

পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ডিএমপির পর বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট-সিএমপি সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের হাত ধরেই নতুন নতুন সেবার উদ্ভাবন করেছে, পেয়েছে নতুন পরিচয়। তাই তাঁর হাতে উঠেছে গৌরবের পুরস্কার-বিপিএম। তবে এটি তাঁর প্রথম পদক নয়। এর আগে ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক-পিপিএম’ও অর্জন করেছিলেন সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।