১০ বছরের শিশু রিকা মনির খুনি নাসির র‌্যাবের জালে

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ভুজপুরে শিশু ফারহানা ইয়াছমিন রিকা মনির খুনি এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নাসিরকে প্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। নাসির পূর্ব ভূজপুরের নুরু আহমদের ছেলে। রিকা মনিকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগের পর বিচার চলাকালে জামিনে গিয়ে আত্মগোপন করেছিল নাসির।

সোমবার (২৯ মে) সকালে বিষয়টি চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেন র‌্যাব০৭এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. নূরুল আবছার। তিনি বলেন, ২০১০ সালের ১ এপ্রিল ফটিকছড়ির ভুজপুরে শিশু ফারহানা ইয়াছমিন রিকা মনিকে হত্যা করা হয়। তার মা বাদি হয়ে মামলা করেছিলেন। ৯ এপ্রিল ২০১৯ চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল নাসিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। এই মামলার অপর আসামি শাহ পরানকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

তিনি আরও বলেন, মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি শাহ পরানকে ২৬ মে আমরা গ্রেপ্তার করি। তারপর নাসিরের বিষয়ে তথ্য নিয়ে তাকে লোহাগাড়ার চুনতি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শাহ পরান ও নাসির জামিনে গিয়ে আত্মগোপনে ছিল। বিয়ে বাড়িতে রান্না, হোটেল বয় হিসেবে এখানে—ওখানে ছদ্মবেশে ছিল গত এক যুগ। নাসির ছিল শাহ পরানের দুলা ভাই এবং বিয়ের ঘটক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত শিশু রিকা মনির বোন দেলোয়ারা বেগমের সাথে শাহ পরানের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকে শাহ পরান স্ত্রী দেলোয়ারাকে নির্যাতন করতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেলে তাকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়িতে থাকতেন দেলোয়ারা।
তাকে হত্যা করতেই ১ এপ্রিল ২০১০ শাহ পরান তার বোন জামাই নাসিরকে নিয়ে দেলোয়ারার ঘরে প্রবেশ করে। ঘুমন্ত দেলোয়ারাকে ছুরিকাঘাত করে। দেলোয়ারা এবং রিকা মনি এক সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। তাদের চিৎকারে মা-বোনসহ অন্যান্যরা ঘুম থেকে জেগে উঠেন। তৎক্ষণে নাসির ও শাহ পরান মিলে দুই বোনকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

শিশু রিকা মনির নাড়িভুড়ি বেরিয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। দেলোয়ারাকে ভর্তি করানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ ঘটনায় দেলোয়ারার মা বাদি হয়ে ভুজপুর থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন। ৯ এপ্রিল ২০১৯ চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল আসামি শাহ পরানকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং নাসিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।