সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সৈকত ঘিরে ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা

একদিকে দিগন্ত জোড়া জলরাশি, অন্যদিকে কেওড়া বন। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে খাল। খালের চারদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল মাথা তুলে জানান দিচ্ছে নিজেদের অস্তিত্ব। সৈকত জুড়ে সবুজ গালিচার বিস্তীর্ণ ঘাস। এই সবুজ গালিচার মাঝ দিয়ে এঁকে বেঁকে বয়ে গেছে সরু নালা। নালাগুলো জোয়ারের সময় পানিতে ভরে উঠে। পাখি, ঢেউ আর বাতাসের মিতালীর অনন্য অবস্থান দেখা মেলে যে সৈকতে তারই নাম গুলিয়াখালি সৈকত।

সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত গুলিয়াখালি সৈকতের পরিবেশ অনেকটা সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মত। এই বন সমুদ্রের অনেকটা গভীর পর্যন্ত চলে গেছে। গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, দেশ-বিদেশের ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে যেন চট্টগ্রামকেই প্রতিনিধিত্ব করে। এতদিন এক প্রকার অনাদরে পড়ে থাকা অপূর্ব সৌন্দর্যের গুলিয়াখালিতে নজর দিয়েছে প্রশাসন। হাতে নিয়েছে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।

জানতে চাইলে মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, সীতাকুণ্ড থেকে গুলিয়াখালি যাওয়ার রাস্তাটি বর্তমানে ১২ ফুট প্রশস্ত। এটিকে আমরা ৩০ ফুট করার পরিকল্পনা নিয়েছি। পার্কিং ব্লক ও ওয়াশ রুম, রেস্টুরেন্টসহ কটেজ নির্মাণ করা হবে।

এছাড়াও সৈকতের সবুজ এলাকায় যাতায়াতের সুবিধার্থে ঝুলন্ত ব্রীজ তৈরি করা হবে বলেও জানান ডিসি মো. মমিনুর রহমান।

সোমবার ২৫৯.১০ একর জায়গায়কে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করেছে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব শ্যামলী নবী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত পরিদর্শন করেন।

এই সৈকতটিতে আগে মানুষের সমাগম হতো না। কারণ এটির সম্পর্কে ওতো বেশি জানতো না। ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) কিছু ছাত্র ঘুরতে এসে তা ফেসবুক, ইউটিউবে আপলোড করেন। এরপরই সৈকতটির ব্যাপারে সবাই জানতে পারেন।

সৈকতটি সরকারীভাবে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারমান এসএম আল মামুন বলেন, সীতাকুণ্ড হলো পাহাড়, সমতল আর সমুদ্রের সমন্বয়ে এক অপূর্ব স্থান। গুলিয়াখালি সৈকত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। সরকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

গুলিয়াখালির উন্নয়নে উপজেলা পরিষদ সব সময় জেলা প্রশাসনের পাশে থাকবে বলেও জানান এই জনপ্রতিনিধি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।