নড়বড়ে সেতু, ঝুলছে পিলার! ঝুঁকি নিয়ে চলছে মানুষ-যান

সেতুর পিলারের কাজ সেতুকে ঠেক দেয়া। সেতুতে চলাচল করা যানবাহনসহ সব কিছু সেই পিলারের ওপর দিয়েই যায়। কিন্তু সেতুটির নিচের অংশে পিলার ভেঙে ঝুলছে সেতুর সঙ্গে। সেতুর উপরের অংশে দু’পাশের রেলিংগুলো ভেঙে পড়েছে আরও একযুগ আগেই। কর্তৃপক্ষ সেতুটির ওপর দিয়ে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েই সেরেছেন নিজেদের দায়।

অথচ গত ৭ নভেম্বর পাশের জেলা খাগড়াছড়িতে এক সঙ্গে ৪২টি সেতু উদ্বোধন করেছন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোনো এক রহস্যজনক কারণে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী, বগাচতর, ভাসান্যদম ও বাঘাইছড়ি উপজেলার আমতলী ইউপির একাংশের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সেতুটি সরকারের দৃষ্টি আসেনি। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে সেতুটি, হারিয়ে যেতে পারে নদী গর্ভে। এতে করে বন্ধ হয়ে যাবে লাখো মানুষের চলাচল।

দীর্ঘদিন যাবৎ ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারায় বিপাকে পড়েছে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। মালামাল পারাপার করতে না পেরে গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও। এই সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও করছে যাতায়াত। পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছে গবাদিপশুর মালিকরাও। রেলিং না থাকায় সেতু থেকে পড়ে হতাহত হচ্ছে গবাদি পশু। এসব ভোগান্তির কারণে গাড়ি চালকরাও থাকেন আতঙ্কে।

স্থানীয়দের দাবি নড়বড়ে এই সেতুতে যেহেতু সাময়িকভাবে ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে, তাই চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি করে যান চলাচল চালু রাখতে হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করতে হবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, আমার বাড়ির পাশে সেতুটি দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ এই অবস্থায় পড়ে আছে। বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদনও করা হয়েছে বহুবার। কিন্তু কেন কোন অগ্রগতি হচ্ছে না, এটা জানা নেই। তিনি আরও বলেন, ৭০ মিটার একটি সেতুর জরাজীর্ণ অবস্থার জন্য আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা নতুন সেতু চাই।

বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার জানান, একটি মাত্র সেতুর জন্য যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে লাখো মানুষের। প্রতিদিন কয়েক মেট্রিক টন কাঁচামাল এই রাস্তা দিয়ে পারাপার করা হয়। বর্তমানে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে প্রায় চার ইউনিয়নের দেড় লাখেরও অধিক মানুষ। তিনি বলেন ইতিমধ্যে সেতুটি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে আবারো তদবির করছি।

সেতুটির সকল তথ্য নথিভুক্ত করে ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই সেতুটি অনুমোদন হবে বলে জানান উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আলম। তিনি আরও জানান, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছে যেকোনো প্রকল্প থেকে সেতুটি নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকিব ওসমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।